১৬ বছরের কমবয়সীদের মোবাইল দিতে নিষেধ করলেন ডাঃ প্রাণগোপাল দত্ত

আজিজুর রহমান
আজিজুর রহমান,
প্রকাশিত: ০৮:৫৪ এএম, ২৮ এপ্রিল ২০১৯ | আপডেট: ০৯:০৪ এএম, ২৮ এপ্রিল ২০১৯

সৌজন্যেঃ মেডিনিউজ বিডি ডট কম
এক গবেষণার বরাত দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক প্রান গোপাল দত্ত বলেছেন- ১৬ বছরের কমবয়সী কারো হাতে মোবাইল ফোন দেয়া উচিত নয়। তাছাড়া পেসমেকার এবং যারা আইসিইউতে কাজ করেন তাদেরও আইসিইউতে কাজ করাকালীন মোবাইল ফোন ব্যবহার করা উচিত নয়। ‘মোবাইল ফোন : স্বাস্থ্য ঝুঁকি’ শীর্ষক এক সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারটি আয়োজন করে ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, চিটাগাং (ইউএসটিসি)। গতকাল (২৫ এপ্রিল) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়টির মওলানা ভাসানী অডিটরিয়ামে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংবাদপত্র ‘দৈনিক আজাদী’র সম্পাদক এম এ মালেক। প্রফেসর ড. এ এম এম এহেতশামুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. নুরুল আবসার, ভারপ্রাপ্ত ট্রেজারার প্রফেসর ড. শফিউল হাসান ও বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসপাতালের সিইও আহমদ শিফার উদ্দিন।প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম এ মালেক বলেন- মোবাইল ফোনের ব্যবহার নিয়ে আজকের যে সেমিনার, বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেমিনারের মূল বক্তা মোবাইল ফোন ব্যবহারের ভালো-মন্দ দিক সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন। এখানে যারা আছেন, সবাই বিবেকবান মানুষ। আশা করছি, আপনারা নিজেরাই বিষয়ের গভীরতা অনুধাবন করবেন। প্রযুক্তির ভালো-মন্দ উভয় দিকই রয়েছে। তবে ব্যবহারের বিষয়ে গণসচেতনতা প্রয়োজন। আজকের এ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্যও কিন্তু এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি। ট্রাফিক সিস্টেমের খুব খারাপ অবস্থা উল্লেখ করে আজাদী সম্পাদক বলেন- কোথাও যেতে হলে এখন কয়েক ঘন্টা লেগে যায়। তবে এক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের একটি সুবিধা রয়েছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অফিসের সব কাজ করে ফেলা যায়।
মূল বক্তা বলেছেন- বিল গেটস ১৪ বছরের আগ পর্যন্ত নিজের কোন ছেলেকে মোবাইল দেননি। মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিল গেটস জানেন বলেই দেননি।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে অধ্যাপক ডা. প্রান গোপাল দত্ত বলেন- দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল ফোনে কথা বলা উচিত নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে- মোবাইল ফোন ও এর বেইজ স্টেশন থেকে আনলাইকলি ক্যান্সার, ব্রেইন টিউমার ও স্লেভারি গ্লান্ড টিউমারের ঝুঁকির শঙ্কা রয়েছে। মোবাইল ফোন আসার পর আমেরিকায় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে ৪গুণ। মৃত্যুর হার বেড়েছে ১০গুণ। তাছাড়া মোবাইলে ট্র্যাপ এখন ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে। আর ফেসবুক তো আছেই। এক গবেষণায় তথ্য- ফেসবুক মানুষের মস্তিস্কে কোকেনের মতোই আসক্তি সৃষ্টি করে।

উপস্থাপনার শেষ পর্যায়ে কিছু সুপারিশও তুলে ধরেন অধ্যাপক প্রান গোপাল দত্ত। সুপারিশমালায় তিনি বলেন- তিন মিনিটের বেশি কথা না বলা। কথার মাঝখানে ১৫ মিনিট বিরতি নেয়া, প্রয়োজনে স্পিকার বা হেডফোন ব্যবহার করা। এছাড়াও মোবাইলের বেইজ স্টেশন থেকে দূরে থাকতে হবে। রাস্তা পারাপারের সময় ফোনে কথা নয়। আইসিইউ-তে কাজ করার সময় কোন ধরণের মোবাইল ব্যবহার নয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি প্রফেসর ডা. এএমএম এহেতশামুল হক বলেন- প্রযুক্তি আমাদের জন্য প্রয়োজনীয়। কিন্তু এর অপব্যবহার মানবজাতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। তাই প্রযুক্তির পরিমিত ব্যবহারে আমাদের সচেতন হতে হবে। যাতে অপব্যবহার না হয়। বিশেষ করে ১৬ বছরের কম বয়সীদের কোন ভাবেই মোবাইল ফোন দেয়া উচিত নয়। এ বিষয়ে জোরালো সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। সৌজন্যেঃ মেডিনিউজ বিডি ডট কম

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)