টিকটকের কাছে সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি

আজিজুর রহমান
আজিজুর রহমান,
প্রকাশিত: ০৫:০৯ পিএম, ৪ জুন ২০২১

টিকটক
নেদারল্যান্ডসের কয়েক হাজার অভিভাবক ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকের কাছে প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে৷ তাদের অভিযোগ শিশুদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা রক্ষায় টিকটক যথেষ্ট কাজ করছেনা৷

দ্য মার্কেট ইনফরমেশন রিসার্চ ফাউন্ডেশন বা এসওএমআই বা সোমি মঙ্গলবার এ বিষয়ে আমস্টারডামের এক আদালতে সপিনা পাঠিয়েছে৷ সোমির দাবি, তারা প্রায় ৬৪ হাজার অভিভাবকের প্রতিনিধিত্ব করছে৷

২০১৮ সালের ২৫ মে থেকে শিশুদের যে ক্ষতি হয়েছে তা টাকার অংকে নির্ধারণ করেছে সোমি৷ ১৩ বছরের নীচের প্রতিটি শিশুর জন্য প্রায় দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে৷ ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সিদের জন্য এক লাখ এবং ১৬ ও ১৭ বছর বয়সিদের জন্য ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে৷

অভিযোগ

টিকটকের বিরুদ্ধে সোমির অভিযোগ হচ্ছে, তারা অনুমতি না নিয়ে টার্গেটেড বিজ্ঞাপন দেখাতে অপ্রাপ্তবয়স্কদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে৷ সোমির আইনজীবী ডুভে লিন্ডার্স নেদারল্যান্ডসের এক গণমাধ্যমকে জানান, প্রয়োজনের চেয়ে বেশি তথ্য সংগ্রহ করছে টিকটিক- যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনের লঙ্ঘন৷ ‘‘টিকটক কীভাবে ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহার করছে এটা স্পষ্ট নয়,” বলেন তিনি৷ এসব তথ্য যুক্তরাষ্ট্র কিংবা চীনের কাছে পাঠানো হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন লিন্ডার্স৷

আরেকটি অভিযোগ হচ্ছে, টিকটক শিশুদের বিপজ্জনক সব চ্যালেঞ্জে অংশ নিতে উৎসাহিত করে৷ এটা করতে গিয়ে সারা বিশ্বে কয়েকজন শিশু মারা গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে৷ এমন একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, দ্য ব্ল্যাকআউট চ্যালেঞ্জ৷ এটি একে অপরকে শ্বাসরুদ্ধ করে রাখার প্রতিযোগিতা৷ এই চ্যালেঞ্জ থেকে একজন সরে না আসা পর্যন্ত তা চলতে থাকে৷

সোমির আইনজীবী লিন্ডার্স বলেন, এমন ঝুঁকিপূর্ণ চ্যালেঞ্জের কারণে মৃত্যু না হলেও এটা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক ক্ষতি করতে পারে৷

অবশ্য টিকটক আসার অনেক আগেই শিশুদের মধ্যে এমন চ্যালেঞ্জ ছড়িয়ে পড়ার খবর শোনা যেত৷

টিকটকের বক্তব্য

অ্যাকাউন্ট খুলতে অপ্রাপ্তবয়স্কদের তাদের অভিভাবকদের অনুমতি নিতে হয়৷ আর ১৩ বছরের কমবয়সিদের সাধারণত টিকটক ব্যবহারের অনুমতি নেই৷

শিশুদের রক্ষায় টিকটক যথেষ্ট চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে টিকটক৷ যেমন ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সিদের অ্যাকাউন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ‘প্রাইভেট’ করে রাখা হয়৷ ফলে অচেনা কেউ শিশুদের ভিডিও দেখতে পারেনা৷

এছাড়া টিকটকের মডারেটররা অনুপযুক্ত ভিডিও সরিয়ে ফেলেন এবং এমন ভিডিও নির্মাতাদের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করে দেন৷ টিকটক ব্যবহারকারীরাও চাইলে কোনো ভিডিওর বিরুদ্ধে রিপোর্ট করতে পারেন৷

টিকটকের মালিক চীনের ইন্টারনেট কোম্পানি বাইটড্যান্স৷ এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৭০ কোটি৷ সংবাদ সংগ্রহ করতে ডয়চে ভেলেসহ অন্যান্য গণমাধ্যমও টিকটক ব্যবহার করছে৷

একই ধরনের মামলা

গত এপ্রিলে ব্রিটেনের শিশু অধিকার কর্মীরা টিকটকের বিরুদ্ধে নেদারল্যান্ডসের মতো প্রায় একইরকম আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেন৷

গতমাসের শেষে ইউরোপীয় কমিশন টিকটকের ব্যবসানীতি পর্যালোচনা করার ঘোষণা দিয়েছে৷ এছাড়া টিকটকের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনাও শুরু হয়েছে৷

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রেও টিকটকের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছিল৷

সূত্রঃ ডয়চে ভেলে
পার্মালিংক https://p.dw.com/p/3uNoM


পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)