“এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি বাস্তবায়ন কমিটি” বদলির দাবিতে ৬ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন করবে

নিজস্ব প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিনিধি,
প্রকাশিত: ০৭:০৭ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ০৭:০৮ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

প্রতীকী ছবি
মোঃ আবুল হোসেন, নিজস্ব প্রতিনিধি ||
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় দুই ধরনের নীতি অবলম্বন করা হচ্ছে সরকারি এবং বেসরকারি। সরকারি ব্যবস্থাপনায় বদলি প্রথা প্রচলিত আছে কিন্তু বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থায় তা নেই। যেখানে প্রত্যেকে সমান সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথা। তাই নিজ অধিকার আদায়ে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ খ্রি. মানববন্ধন ও আলোচনা সভার ঘোষণা করা হয় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে । বর্তমান সময়ে বদলি প্রত্যাশি শিক্ষকরা দিন বদলের ডাক দিয়েছে। সময় বদলে যাচ্ছে কিন্তু বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জীবন বদলাছে না। যুগের পর যুগ একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে আজ হাঁপিয়ে উঠেছে। নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে জীবন যাত্রা। নাড়ির স্পন্দন থেমে যাচ্ছে একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে।বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আজ মনে হচ্ছে জেল খানায় বন্দী। জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ তে উল্লেখ আছে সরকার মনে করলে বদলি ব্যবস্থা চালু করতে পারবে। বেশ কয়েক বার উদ্যোগ ও নেওয়া হয়েছিল বদলি ব্যবস্থা চালু করার উদ্দেশ্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজও তার কোন সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়নি।

সাম্প্রতিক সময়ে বলা হয়েছিল বদলি ব্যবস্থা ২০২০ সালের মধ্যে চালু হতে পারে। বদলি ব্যবস্থার জন্য আলাদা সফটওয়্যার তৈরি করা হবে। সফটওয়্যারে বদলি বিষয়ে কাজ চলছে এমন ঘোষণা এসেছিল। কবে নাগাদ এই সফটওয়্যারের কাজ শেষ হবে তার কোন সঠিক সময় আজও জানা গেল না। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আশায় বুক বেধে ছিল বদলি ব্যবস্থা শীঘ্রই চালু হতে যাচ্ছে। কিন্তু যতই দিন অতিবাহিত হচ্ছে ততই আশার আলো নিভে যাচ্ছে। আজ তাই শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তনের ডাক দিয়ে সংগঠিত হচ্ছে বদলি প্রত্যাশি বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ। দেশের পরিবর্তন হচ্ছে, নিত্য নতুন নিয়ম হচ্ছে, শিক্ষা ব্যবস্থায় নতুন নতুন তথ্য সংযুক্ত করা হচ্ছে, শিক্ষকদের দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের দিকনির্দেশনা। শুধু পরিবর্তন হলো না বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জীবন যাত্রার মান। রয়েই গেল একই প্রতিষ্ঠানের বন্দী হয়ে।

নিজ জেলা এবং উপজেলায় বদলি প্রথা চালু করার জন্য বেসরকারি শিক্ষক সমাজ আজ রাজ পথে নামতে বাধ্য হচ্ছে।দূর দূরান্তে দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার ফলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় শিক্ষকদের। অনেক ক্ষেত্রে কারণে অকারণে শিক্ষকদের হতে হয় লাঞ্চিত। আবার অনেক শিক্ষককে হারাতে হয় চাকরি। প্রতিনিয়ত দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন জেলা এবং উপজেলায় শিক্ষকরা নির্যাতিত হচ্ছে। সেই কারণে বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় বদলি প্রথা খুবই জরুরি।
বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর থেকে এখনো পর্যন্ত বদলি প্রথা ফাইল বন্দী হয়েই রয়ে গেল। গত ৩০ এপ্রিল ২০১৯ খ্রি. কর্তন বন্ধ করার উদ্যোগে মিটিং এ মহাপরিচালক বলেছিলেন আপনারা যেভাবে চান বদলি সেভাবে হবে ১০০% বলতে পারি। একথা বলে আশ্বস্ত করার পর শিক্ষক সমাজ আশার আলো দেখতে পেয়েছিল। কিন্তু এখনো পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় শিক্ষকরা আজ হতাশায় নিমজ্জিত। যেখানে বদলি প্রথার উদ্যোগ নিয়ে সরকার প্রশংসা কুড়িয়ে ছিল। শিক্ষকদের মনোকুঠোরে স্থান করে নিয়ে ছিল তা আজ হতাশায় পরিগনিত হচ্ছে। আজ ২০১৯ সাল প্রায় অতিবাহিত হতে চলছে কিন্তু বদলি প্রথার কোন অগ্রগতি নেই। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আশায় বুক বেধে ছিল দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারি করে এর অবসান ঘটাবেন কর্মকর্তা গণ। কিন্তু দুঃখের বিষয় আজও আমরা বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আশার আলো দেখতে পেলাম না।বদলি প্রথা এখনো পর্যন্ত চালু না করার কারণে দিন দিন শিক্ষক অসন্তোষ বেড়েই চলেছে।

আজ তাই শিক্ষকরা প্রতিবাদ স্বরূপ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ খ্রি. বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক বৃন্দ মানববন্ধন ও আলোচনা সভার ডাক দিয়েছে। বদলি প্রত্যাশি শিক্ষকরা আগামী ৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও আলোচনা সভায় তাই দলে দলে যোগ দিয়ে বদলির পক্ষে অবস্থান নিবেন। মানববন্ধন ও আলোচনা সভার মাধ্যমে বদলি প্রথা চালু করার জন্য জোর দাবি জানানো হবে। আজ বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বদলি প্রথা চালুর পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। জাগ্রত হয়েছে বদলি প্রত্যাশি শিক্ষক বৃন্দ। বদলি প্রথা চালু না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলছে চলবে এই দৃঢ় প্রত্যয় করেন শিক্ষক বৃন্দ। সম্মানিত বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক বৃন্দ উক্ত মানববন্ধন ও আলোচনা সভায় আপনারা সবাই নিমন্ত্রিত। সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে এগিয়ে মানববন্ধন ও আলোচনা সভায় আসার আহবান জানান এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি বাস্তবায়ন কমিটির শিক্ষক নেতারা। নিজের অধিকার নিজেকে আদায় করতে হবে। নিজ অধিকারের বিষয় তুলে ধরুন। বদলি শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাণ কেন্দ্র। যেখানে বদলি প্রথা চালু করলে বাড়তি কোনো খরচ হবে না। বদলি প্রথা চালুর জন্য চাই শুধু ক্লিন মনমানসিকতা। বদলি প্রথা শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি শুদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া। যার মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য ত্বরান্বিত হবে। বদলি প্রথা চালু হলে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে। শিক্ষকদের মধ্যে আসবে পরিবর্তন এবং পরিবর্ধন। পাঠদান প্রক্রিয়ায় আসবে পরিবর্তন।

দিন বদলে যাচ্ছে অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন এসেছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দরবারে মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছে গেছে এবং উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় দ্বিতীয়। উন্নয়নশীল দেশের পূর্ব শর্ত হলো দেশের প্রতিটি সেক্টরের উন্নয়ন। যদি কোন সেক্টর অপূর্ণ থাকে তাহলে প্রকৃত উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। আজ বাংলাদেশে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে। আজ বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশের মেরুদণ্ড আজ শক্ত। একটি দেশের মেরুদণ্ড যাদের ওপর নির্ভরশীল তাদেরকে পিছনে ফেলে রেখে প্রকৃত উন্নয়ন কল্পনা করা যায় না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর হলো শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষা ব্যবস্থা আজ বৈষম্যে ভরপুর। হতাশায় নিমজ্জিত শিক্ষা সেক্টর। শিক্ষা সেক্টরের বৈষম্য দূরীকরণে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রীর নিকট বিনীত অনুরোধ জানান।

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি বাস্তবায়ন কমিটির শিক্ষক নেতারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে নিজ হাতে দায়িত্ব নিয়ে বদলি প্রথা চালু করার বিনীত অনুরোধ জানান। তাতে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে । সমগ্র বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ আপনার পাশে থাকবে চিরকাল।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)