বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় বদলি ছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়ন সম্ভব নয়।

নিজস্ব প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিনিধি,
প্রকাশিত: ০৯:৪২ পিএম, ২১ আগস্ট ২০১৯

প্রতীকী ছবি
মোঃ আবুল হোসেন || শিক্ষা ব্যবস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বদলি। শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাণ কেন্দ্র হলো বদলি ব্যবস্থা। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি এবং অবনতি বদলির ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল। একই প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ দিন চাকরি করার ফলে শিক্ষক সিন্ডিকেট সৃষ্টি হয়। তাতে শিক্ষার মান হয় নিম্নগামী। শ্রেণী পাঠদান প্রক্রিয়া হয় বাধাগ্রস্ত। সিন্ডিকেটের কারণে শ্রেণি পাঠদানের গুরুত্ব কমে যায়। ব্যক্তিগত স্বার্থে মনোযোগী হয়ে পড়ে শিক্ষক। যদি সরকারি ন্যায় বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলির প্রথা প্রচলিত হত তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থার আমুল পরিবর্তন হত। সিন্ডিকেট চিরতরে দূর হয়ে যেত শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে। প্রাণ ফিরে পেত বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা।

বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় বদলি প্রথা চালু না থাকার কারণে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা প্রকৃত শিক্ষা থেকে হচ্ছে বঞ্চিত। কিছু অসাধু শিক্ষকরা গড়ে তুলেছে ব্যক্তিগত কোচিং বাণিজ্য। যা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য শুভলক্ষণ নয়। শ্রেণি পাঠদানের প্রতি স্পীড বাড়াতে বদলি প্রথা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বদলি প্রথা ছাড়া যেমন শিক্ষক সিন্ডিকেট দূর করা যাবে না। তেমনি শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য ও পূরণ করা সম্ভব হবে না। বদলির মাধ্যমে নতুন অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ শিক্ষক পাওয়া যাবে। নতুন নতুন প্রতিষ্ঠানে নিজেকে প্রকাশ করার জন্য প্রতিটি শিক্ষক শ্রেণি পাঠদানের প্রতি বেশি মনোযোগী হবেন। তাতে শিক্ষার্থীরা হবে উপকৃত। নতুন নতুন তথ্য জানা সম্ভব হবে। পাঠদান প্রক্রিয়ায় আসবে পরিবর্তন। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠবে। বিভিন্ন তথ্য উপাও জানার আগ্রহ বেড়ে যাবে শিক্ষার্থীদের।

নিজ জেলা এবং থানায় অনেকে চাকরি না পেয়ে বিভিন্ন জেলায় চাকরি করে। দূর দূরান্তে একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার ফলে শিক্ষকরা একঘেয়েমি হয়ে যায়। যার ফলে শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। আর বর্তমান সময়ে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সরকারি অংশ নামে যে অনুদান পায় তা দিয়ে সংসারের ভরনপোষণ করাই কঠিন হয়ে পড়ে। বাড়ি ভাড়া এবং চিকিৎসা ভাতা তো নাম মাত্র। সংসার চালানোর পিছুটান ও শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর। শিক্ষকদের যদি পিছুটান থাকে তাহলে প্রকৃত শিক্ষা দিবে কীভাবে? দূর দূরান্তে চাকরি করলে চাই থাকার ব্যবস্থা। দেখা যাচ্ছে অনেক শিক্ষকই এই নাম মাত্র সরকারি অংশ বা অনুদানের উপর নির্ভরশীল। যাদের নেই কোন বাড়তি ইনকাম। এই অভাব অনটনের মধ্যে অতিবাহিত হয় তাদের জীবন। বদলি প্রথা আজ যদি চালু থাকত তাহলে হয়তোবা এই কষ্টের অবসান হতো।

শিক্ষা মান উন্নয়নে বদলি প্রথার বিকল্প কিছু হতে পারে না। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে পক্ষান্তরে শিক্ষা ব্যবস্থা পিছিয়ে যাচ্ছে এমনটা কোন দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। দেশের উন্নয়নে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন অতীব জরুরি। আজ বদলি প্রথা চালু করার জন্য শিক্ষক সমাজ জেগে উঠেছে। প্রাচীন প্রথা বিলুপ্ত করে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। বর্তমান বিশ্বে কোথাও বদলি প্রথা চালু নেই এমন তথ্য আমার জানা নেই। শুধু বাংলাদেশেই দুই ধরনের নীতি অবলম্বন করা হচ্ছে সরকারি এবং বেসরকারি। সরকারি যারা তারা বদলি হতে পারবে কিন্তু বেসরকারিরা নয়। এই দুই ধরনের নীতি শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রভাব পড়বে।মূল উদ্দেশ্য হবে বাধাগ্রস্ত। একটি দেশের মেরুদণ্ড নির্ভর করে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর। কোন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা যদি দূর্বল হয় তাহলে দেশের উন্নয়ন পিছিয়ে যেতে বাধ্য। আর এই কারণে শিক্ষা ব্যবস্থায় স্থবিরতার সৃষ্টি হয়। উন্নয়ন হয় বাধাগ্রস্ত।
বদলি প্রথা প্রচলিত হলে শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য পূরণ হবে নতুবা শিক্ষা ব্যবস্থার আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট বিনীত অনুরোধ এই যে, সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থা এক লেভেলে এনে শিক্ষা ব্যবস্থার গতি বৃদ্ধি করুন।
শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করতে বদলি প্রথার বিকল্প নাই।

জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু

মোঃ আবুল হোসেন
সিনিয়র যুগ্ম -মহাসচিব
বাশিস নজরুল
কেন্দ্রীয় কমিটি

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)