ভয়ঙ্কর এক সপ্তাহ: মৃত্যু ৮৫৯, আক্রান্ত ৫৩১১৮

আজিজুর রহমান
আজিজুর রহমান,
প্রকাশিত: ০৭:১১ এএম, ৪ জুলাই ২০২১

ফাইল ফোটো
স্বাস্থ্য‌বি‌ধি না মে‌নে স্রোতের ম‌তো রাজধানী ছে‌ড়ে মানুষ জ‌নের অন্যান্য জেলায় যাওয়া, সীমান্ত দি‌য়ে বি‌ভিন্ন উপা‌য়ে ভার‌তে যাওয়া আসার কার‌ণে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হওয়া এবং মাস্ক না পরার কার‌ণেই মূলত প্রতি‌দিন ক‌রোনায় আক্রান্ত এবং মৃ‌তের সংখ্যা বাড়‌ছে ব‌লে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বি‌শেষজ্ঞরা।

গত ২৭ জুন থে‌কে আজ শনিবার (৩ জুলাই) পর্যন্ত টানা ৭ দি‌নের প্রতি‌দিন দে‌শে শতা‌ধিক ক‌রে মানুষ মারা গে‌ছেন। এই নি‌য়ে গত এক সপ্তা‌হে দে‌শে ক‌রোনায় মারা গে‌ছেন ৮৫৯ জন। আর মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১৪ হাজার ৯১২ জন। টানা ৩ দিনের প্রতিদিন আক্রান্ত হ‌য়ে‌ছেন ৮ হাজা‌রেরও বে‌শি মানুষ। শেষ এক সপ্তা‌হে আক্রান্ত হ‌য়ে‌ছেন ৫৩ হাজার ১১৮ জন। এই সাতদিনে গ‌ড়ে প্রতি‌দিন আক্রা‌ন্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৫৮৮ জন। এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হ‌য়ে‌ছেন ৯ লক্ষ ৩৬ হাজার ২৫৬ জন।

ফাইল ফোটো
গত বছরের মার্চে দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর খোঁজ পাওয়ার পর এটাই (২৭ জুন-৩ জুলাই) মৃত্যু এবং আক্রান্তের হিসাবে সবচেয়ে ভয়ংকর সপ্তাহ।

ক‌ঠোর বি‌ধি নি‌ষেধসহ সারা দে‌শে একযো‌গে লকডাউন দি‌য়েও কো‌নো ভা‌বে শনাক্ত এবং মৃত্যৃর হার কমা‌নো যা‌চ্ছে না। বি‌শেষ ক‌রে রাজধানীর বাই‌রে ক‌রোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার ক্রমশই বাড়‌ছে।

দে‌শের অন্য সব জেলার তুলনায় রাজধানী‌তে চি‌কিৎসা ব্যবস্থা অ‌নেক ভা‌লো হওয়ার কার‌ণে ক‌রোনা আক্রান্তরা চি‌কিৎসা‌সেবা নি‌তে পার‌ছেন। কিন্তু মফস্বল শহ‌রে বি‌শেষজ্ঞ চি‌কিৎসক, আধু‌নিক চিকিৎসা সু‌বিধা না থাকার কার‌ণে রোগীরা ঠিক ম‌তো চি‌কিৎসাসেবা পা‌চ্ছেন না। রাজধানীর বাই‌রে বি‌ভিন্ন জেলা শহ‌রে আই‌সিইউ এবং অ‌ক্সি‌জে‌নের অভা‌বে বে‌শি রোগী মারা যা‌চ্ছেন ব‌লে জানা গে‌ছে।

প্রতি‌নিয়ত ক‌রোনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর উর্ধ্বগ‌তি বিষ‌য়ে এম আর খান শিশু হাসপাতা‌লের অধ্যাপক ফরহাদ মনজুর ব‌লেন, `বর্ডার দি‌য়ে বৈধ এবং অ‌বৈধ ভা‌বে ভারত থে‌কে লোকজন অবা‌ধে দে‌শে প্রবেশ ক‌রে‌ছে। সে কার‌ণে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট সারা দে‌শে ছ‌ড়ি‌য়ে প‌ড়ে‌ছে। তার ওপর প্রথম দি‌কে লকডাউন‌কে তোয়াক্কা না ক‌রে, স্বাস্থ্য‌বি‌ধি ছাড়া লোকজ‌নের গ্রামমূখী হওয়া‌তে ক‌রোনা সারাদে‌শে বিস্তার লাভ করেছে। এখন এই লকডাউ‌নের সময় বাসা থে‌কে বের হওয়া যা‌বে না। একান্ত বের হ‌তে হ‌লে স্বাস্থ্য‌বি‌ধি মানতেই হবে। কো‌নো গা‌ফিল‌তি করা যা‌বে না।’

ল্যাবএইড হাসপাতা‌লের মে‌ডি‌সিনের অধ্যাপক মঞ্জ‌ুর রহমান গা‌লিব ব‌লেন, স্বাস্থ্য‌বি‌ধি না মে‌নে, যত্রতত্র যেভা‌বে সবাই চলা‌ফেরা ক‌রে‌ছি, এটা তারই খেসারত। দ্রুততম সম‌য়ের ম‌ধ্যে সবাই‌কে টিকার আওতায় আন‌তে হ‌বে। যত‌দিন না আনা যা‌চ্ছে, ক‌ঠোরভা‌বে সবাই‌কে সেই সময় জুড়ে স্বাস্থ্য‌বি‌ধি মে‌নে চল‌তে হ‌বে। এ ব্যাপা‌রে প্রশাসন এবং আইন শৃংখ্যলা বা‌হিনী‌কে আরও ক‌ঠোর ভূ‌মিকা নি‌তে হ‌বে।


পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)